স্বদেশ ডেস্ক:
আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশের গায়ান জেলার একটি ছোট্ট ক্লিনিকের শয্যা রয়েছে মাত্র ৫টি। কিন্তু নিরুপায় হয়ে ভূমিকম্পে আহত অন্তত ৫০০ জনকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে।
এদের মধ্যে ২০০ জন একদিনেই মারা গেছেন। মঙ্গলবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চল।
সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১ হাজার ১০০ জনের। এখনো উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিবিসি।
গত দুই দশকের মধ্যে ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে এত মানুষের মৃত্যু হয়নি। তালেবান প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে।
এরইমধ্যে দুর্যোগকবলিত এলাকায় খাদ্য ও আশ্রয়ের সংকট দেখা দিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা মৃতদেহে পচন ধরতে শুরু করেছে। আর তারই প্রভাবে ওই এলাকায় দেখা দিয়েছে কলেরা মহামারির শঙ্কা।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকতিকা প্রদেশ। সেখানকার প্রত্যন্ত গায়ান জেলা থেকে হাতেগোনা কয়েকজন রোগীকে হেলিকপ্টারে করে বিভিন্ন নগরীর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কিন্তু যাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই, তারাই বাধ্য হয়ে পড়ে আছেন ৫ শয্যার ওই ক্লিনিকে। মাত্র দুজন চিকিৎসক তাদের চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানান ক্লিনিকটির কর্মচারী গুল।
তিনি জানান, যে জেনারেটর দিয়ে ক্লিনিকটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে, জ্বালানির অভাবে সেটিও কিছুক্ষণ পরপর বন্ধ হয়ে যায়। অন্যান্য প্রদেশ থেকে সাহায্যের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো এখনো পৌঁছায়নি।
যদিও এখনো আহতদের ক্লিনিকে আনা হচ্ছে। গুল বলেন, ‘কয়েক ডজন মানুষের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। আমার মনে হয় না তারা রাতটুকু পার করতে পারবে।’
ভূমিকম্পে পাহাড়ি গায়ান জেলার পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় পাকতিকা প্রদেশের চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাদের কাছে ব্যথানাশক ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিকের ভয়াবহ সংকট রয়েছে।
পাশের জেলা থেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে গায়ান ক্লিনিকে কাজ করতে আসা একজন চিকিৎসক জানান, ক্লিনিকে তরুণ এক বাবা তার সন্তান এবং বাকি পরিবার কোথায় আছে তা জানতে চেয়ে হাউমাউ করে কাঁদছেন।